ছবির ক্যাপশন ঃ আলীকদমে জেএসএস এর সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইয়োংলক মুরুং।
আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি :::
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) যদি পাহাড়ের শান্তি বিনষ্ট করে তবে মুরুংরা ১৯৮৪-৮৫ সালের মতো সংগঠিত হয়ে রুখে দাড়াবে। লামা-আলীকদমের শান্তিপূর্ণ এলাকাকে অশান্ত করবেন না। জেএসএস সন্ত্রাসীদের হুমকীতে আজ নিরাপত্তাহীন দুর্গমের সাধারণ মুরুং জনগোষ্ঠী।
বুধবার আলীকদম প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জেএসএস কে অভিযুক্ত করে এ হুশিয়ারি দেন লামা-আলীকদমের মুরুং কল্যাণ সংসদের নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে আলীকদম মুরুং কল্যাণ সংসদের সভাপতি মেনদন মুরুং স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইয়োংলক মুরু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুরুকপাতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ¤্রাে, মেনরুম মুরুং কার্বারি, মেনওয়াই ¤্রাে, খামলাই ¤্রাে ও মারান মুরুং কমা-ারসহ অর্ধশতাধিক মুরুং জনসাধারণ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে একাত্মতা পোষণ করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সমর রঞ্জন বড়–য়া ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ফরিদ আহাম্মদ।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, জেএসএস এর অস্ত্রধারী কতিপয় সন্ত্রাসী লামা ও আলীকদম উপজেলার পাহাড়ি পল্লীতে অপহরণ, খুন, চাঁদাবাজি করে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করছে। এছাড়াও সরকারি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে চাঁদার দাবীতে বাধা দিচ্ছে।
মুরুং নেতাদের দাবী, জেএসএস এর সশস্ত্র অংশ শান্তিবাহিনীর সদস্যরা পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করছে। এরা জনসাধারণ ও সরকারকে চাপে রেখে অসাংবিধানিক দাবি আদায়ের অপচেষ্টায় লিপ্ত। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর শান্তিচুক্তি সম্পাদনের পরও কথিত দাবী আদায়ের লক্ষ্যে তারা আবারো অস্ত্র হাতে নিয়ে পাহাড়ি পল্লীতে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এতে জনভোগান্তির পাশাপাশি সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে কুরুকপাতা ইউপি চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ¤্রাে বলেন, আমার ইউনিয়নের দোছরি এলাকায় সন্ত্রাসীরা পরিবার প্রতি ১ হাজার ও ব্যবসায়ী প্রতি ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করছে। মুরুং বাহিনী কমা-ার মেনদন ¤্রাে বলেন, আশির দশকে শান্তি বাহিনীর অত্যাচার থেকে রেহায় পেতে মুরুং বাহিনীকে সেনাবাহিনী গাদা বন্দুক দিয়েছিল। বর্তমানে ৩৬৫ টি গাদা বন্দুক (দেশীয় তৈরী) আছে এ বাহিনীর হাতে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে দু’পক্ষে সশস্ত্র সংঘাত লেগে যেতে পারে।
মুরুং নেতা মেনওয়াই মেম্বার বলেন, লামা উপজেলার লুলাইং ও লেমু পালং এলাকায় শান্তিবাহীনির সদস্যরা চাঁদা আদায় করছে। ব্যবসায়ীরা চাঁদা না দেওয়াতে ১৬টি দোকান বন্ধ করে দিয়েছে তারা। এছাড়াও সরই ইউনিয়নের একটি কোম্পানীর বাগানে অগ্নিসংযোগ করেছে। আলীকদমের মেনপা পাড়া ও রোয়াম্ভু এলাকায় চাঁদা না দেওয়াতে ৩১ লাখ টাকার কালভার্ট নির্মাণ ও রিংওয়েল স্থাপনে বাধা দেওয়া হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, অসাংবিধানিক দাবি আদায় করতে না পেরে জেএসএস এলাকার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের নির্যাতন করছে। ফলে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট ও উন্নয়ন কর্মকান্ড বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সন্ত্রাসীরা শান্তিপ্রিয় মুরুং যুবকদের বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে দলভারি করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির বিষয়ে বিক্ষিপ্ত অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। কিন্তু এ পর্যন্ত সুনির্দ্ধিষ্ট তথ্য দিয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ না করায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না।
পাঠকের মতামত: